উদ্ভিদ ও প্রাণীসম্পদ (Flora and Fauna)

worddirection.com - Sal Forest
পশ্চিমবঙ্গের উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পদ রঙ ও রূপের প্রাচুর্যে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ। উত্তর থেকে দক্ষিন কিম্বা পূর্ব থেকে পশ্চিমে চারিদিকেই জীববৈচিত্র লক্ষ করা যায়। ২০০৯ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১১,৮৭৯ বর্গ কিমি জুড়েই বনভূমি, যা মোট ভৌগলিক অবস্থানের ১৩.৩৮ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিনে অবস্থিত সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমির অংশ। দক্ষিণাংশের গাঙ্গেয় পলিমাটি এবং অনুকূল বৃষ্টিপাতের কারণে এ অঞ্চলের মৃত্তিকা বেশ উর্বর, এবং খাদ্যশস্যে ভরপুর।

রাজ্যের পশ্চিমাংশে মালভূমির অন্তর্গত হওয়ার কারণে, এই অঞ্চলের গাছপালার সাথে ছোটনাগপুরের মালভূমির গাছপালার বিশেষ মিল দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্যিক গাছ গুলির মধ্যে অন্যতম হলো শাল ও সেগুন গাছ। সুন্দরবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভিদ হলো সুন্দরী গাছ, যার কারণেই হয়ত সুন্দরবনের নাম করণ হয়েছে।
thehindu.com - Rhododendron

দক্ষিণাংশের মত উত্তরেও উদ্ভিদ বৈচিত্রের তারতম্য দেখা যায়। হিমালয়ের পাদদেশে ও ডুয়ার্স অঞ্চলে চিরহরিত বৃক্ষের দেখা মেলে। তেমনি পাহাড়ের উচ্চতায় ৩৫০০ ফুটের উপরে দেখা মেলে ওক, কনিফার, ও বিখ্যাত রডোডেরেন্ড্রোন এর। পাহাড়ের আরো উচ্চতায় দেখা মেলে বিশেষ অর্কিডের, যার রঙ ও রূপ সবার মন কারে।

পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক এলাকার ৩.২৬% জায়গা জুড়ে সুরক্ষিত এলাকায় বন্য প্রাণী সংরক্ষনাগার এবং পাঁচটি জাতীয় উদ্যান রয়েছে। এদের মধ্যে বিখ্যাত গুলি হলো সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, বক্সা টাইগার রিজার্ভ, গরুমারা জাতীয় উদ্যান, নেওরা ভ্যালী ন্যাশনাল পার্ক, এবং সিঙ্গলীলা ন্যাশনাল পার্ক। পশিমবঙ্গের উল্লেখযোগ্য প্রাণীগুলি হলো ভারতীয় হাতি, হরিণ, বাইসন, চিতাবাঘ, গৌর এবং নদীর ও নোনা জলের কুমির।
এছাড়াও অনেক প্রজাতির পাখির দেখা মেলে বাংলার গ্রামে ও শহর অঞ্চলে। শীতের সময় পরিযায়ী পাখির দল ভিন দেশ থেকে পাড়ি জমায় আমাদের রাজ্যে। বিখ্যাত কয়েকটি পাখিরালয় হলো সাঁতরাগাছি ঝিল, পূর্বস্থলী, চিন্তামনি কর স্যানকচুয়ারী , প্রভিতি।

indiamarks.com - Royal bengal Tiger
ভারতের জাতীয় প্রাণী হলো বাঘ (royal Bengal tiger) যা সুন্দরবন বনাঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া পাহাড়ে মহানন্দা টাইগার রিসার্ভ ও সিন্গলিলা ন্যাশনাল পার্ক এও দেখা মেলে। সম্প্রতি নেওরা ভ্যালি তেও বাঘের দেখা মিলেছে।
পশ্চিমবঙ্গের আরো কয়েক টি উল্লেখ্য প্রাণী হলো বার্কিং ডিয়ার, লাল পান্ডা, লাল কাকড়া, প্যান্গলীন ইত্যাদি। এছাড়া বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির মধ্যে, একশৃঙ্গ গন্ডার, কচ্ছপ, বেড়াল, ভাম, বন বেড়াল ইত্যাদি। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য বিশ্বে প্রাকিতিক সম্পদের জন্য হেরিটেজের তকমা পেয়েছে। বাংলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ জীবনই উদ্ভিদ ও প্রানিসম্পদের উপরেই নির্ভর শীল।


তথ্যসূত্র: www.nriwestbengal.gov.in

0 Comments