বাঙালিদের কাছে দার্জিলিং একটা Emotion এবং সেটা আমার ক্ষেত্রেও এক। আমার কাজের জায়গা হলেও এই পাহাড়ি শহর টার প্রতি ভালোবাসা বরং বেড়েই চলেছে।
'তিতলি' নামের বাংলা সিনেমায় একটা খুব সুন্দর গান আছে হয়তো অনেকে শুনেছেন। শ্রীকান্ত আচার্যের গাওয়া। তার লাইন গুলো এরকম-
'মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভিতর মন খারাপের দিস্তা
মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়, ব্যাকুল হলে তিস্তা।'
কয়েকদিনের জন্য পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে হয়তো এই খারাপ বা ব্যাকুল মনের হদিশ আপনি পাবেন না। কিন্তু কাজের জন্য যাঁরা পাহাড়ে আছেন, তাঁদের অনেকেই এই লাইন গুলো উপলব্ধি করতে পারেন।
সেরকম কোনো এক সময়ে লিখেছিলাম এই চিঠিটা।
"ভোরের নরম আলো যখন সাদা বরফে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘার গায়ে আলতো ছোঁয়া দেয়, তোমার কথা মনে পড়ে। দার্জিলিংয়ের চড়াই উৎরাই রাস্তায় হেঁটে যেতে যেতে চোখে পড়ে নেপালি শিশুদের নিষ্পাপ হাসি। বড্ড মিল তোমার হাসির সাথে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে হোটেলের ছাদে গিয়ে দাঁড়াই। সিগারেটের ধোঁয়া উড়তে থাকে। তোমার কথা বড্ড মনে পড়ে। কল্পনা করি, তুমি কি করছো এখন! ভালোবাসা নিষ্পাপ জিনিস, তার সবথেকে বড় প্রমান পাই সেই সময়।
দিন কেটে যায় একটা একটা করে। পাহাড়ি রাস্তার বাঁকে সন্ধ্যা নামে। রাত হয়।তখন বড্ড miss করি আমার শহর কে। আমার বাবা মা আর প্রিয়জনদের। আর অবশ্যই তোমাকে! জানো, এরা বড্ড ভালো। ভুলিয়ে দেয় অনেক কিছু নিজেদের আন্তরিকতা দিয়ে। আমার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহু বাঙালি,আর বহু নেপালী লোকজন বড্ড ভালোবাসে আমাদের। পাহাড়ের প্রেমে পড়েছি আগেই। আবার পড়ছি এখনো। ভালো লাগে ছোট ছোট বাচ্চাদের ভিন্ন ভাষার চেঁচামেচি। ভালো লাগে রাস্তায় দেখা হলেই তাদের বলে ওঠা, ' প্রীতম ভাই, সঞ্চাই হুনু হনছো?' (কেমন আছো?)
ছবিঃ Pritam Mukhopadhyay |
তাদের বলি ' সঞ্চাই ছু', মানে ভালো আছি। বেঁচে থাকুক এরা। বেঁচে থাকুক এদের আন্তরিকতা। এর মাঝেই তোমার কথা ভেবে দিন চলে যায়। আমি ভালো আছি। পাঠালাম একমুঠো পাহাড়ি ভালোবাসা। এই ভালোবাসা লেগে আছে এই শহর টার প্রতিটি বাঁকে। ভালো থেকো।"
ছবি ও লেখায়ঃ Pritam Mukhopadhyayকপিরাইটেড কনটেন্ট
0 Comments
Thank You!!!